১। ফসলঃ-
মাটির গঠন অনুযায়ী ফুলকী ইউনিয়নের মাটি এটেল এবং এটেল-দোঁয়াশ। তবে বেলে দোঁয়াশ এবং বেলে মাটি দেখা যায় বীলের তীরবর্তী অঞ্চলে। খাদ্য শস্যের মধ্যে আউশ, বোনা আমন, রোপা আমন, বোরো এবং গম প্রধান। তবে বোরো এবং বোনা আমনের প্রাধান্য রয়েছে। সারা ইউনিয়ন প্রধানত ধানের চাষ হয়ে থাকে। বাসাইল উপজেলায় চামারা নামে একটি দেশী জাতের ধানের চাষ ব্যাপকভাবে করা হয়ে থাকে। বোরো কাটার পর বোনা আমন বা গভীর পানির রোপা আমন হিসাবে চামারা ধানের চাষ হয়। মে-জুন থেকে নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত এধানের চাষ হয়। চামারা ধানের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশের জন্য স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘‘ইষ্টির সেরা মামারা, ধানের সেরা চামারা।’’ খাদ্য শস্য ব্যতিত অন্যান্য ফসলের মধ্যে সরিষার আবাদের প্রাধান্য রয়েছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু কিছু জায়গায় তিলের চাষ করতে দেখা যায়। বেলে দোঁয়াশ মাটিতে খেসারী, মসুর ও মাসকালাই জাতীয় ডালের এবং অন্যান্য এলাকায় আলু, পানিকচু, ওলকচু, মূলা, মিষ্টিআলু প্রভৃতি মূল জাতীয় ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এছাড়া মৌসুমভেদে বিভিন্ন শাক-সবজির মধ্যে বাধাঁকপি, ক্ষিরা, চালকুমড়া, চিচিংগা, ঝিংগা, টমেটো, ডাটা, ঢেড়শ, ধুনদুল, পালংশাক, পুইশাক, ফুলকপি, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, লাউ, সশা, সিম এবং মশলা জাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, হলুদ, আদা, ধনিয়ার চাষ হয়। অর্থকরী ফসলের মধ্যে পাট এবং আখের চাষ এবং সবুজ সার হিসাবে ধইঞ্চার চাষ হয়ে থাকে। ফল জাতীয় ফসলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, পেঁপে, পেয়ারা এবং নারিকেল প্রধান। এছাড়া, লিচু, জাম্বুরা, বরই, বেল এবং বাড়ির আশে পাশে কলার চাষ হয়ে থাকে। বিশেষায়িত ফসলের মধ্যে সরিষা প্রধানত ময়থা উত্তরপাড়া,ময়াথা সাধূলী পাড়া, ময়াথা গাছপাড়া, ফুলকী, ঝনঝনিয়া, তিরঞ্চ, ফুলকী দক্ষিণপাড়া এলাকায় চাষ করা হয়ে থাকে। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত সরিষা আবাদের সময়। ভুট্টা, প্রধানত আইসড়া গ্রামে চাষ করা হয়ে থাকে। নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল-মে পর্যন্ত ভুট্টা আবাদের সময়। ডাল প্রধানত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চাষ করা হয়ে থাকে। নদী তীরবর্তী বেলে-দোয়াশ মাটিতে ডাল উৎপাদন করা হয়। আখ প্রধানত, আইসড়া, একঢালা প্রভৃতি গ্রামে অক্টোবর-নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগষ্ট-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাষ করা হয়ে থাকে। গম সাধারণত , আইসড়া, একঢালা, জশিহাটী, এলাকায় চাষ করা হয়। এসব এলাকায় গম উঠে যাবার পর পাটের চাষ করা হয়। যেসব জমি সাধারণত পতিত থাকে সেসব জমিতে মার্চ থেকে জুলাই-আগষ্ট পর্যন্ত বীজ ও জ্বালানীর জন্য ধইঞ্চার চাষ হয়ে থাকে।
২। মৎসঃ-
মাছের উৎপাদন হিসাবে বাসাইল ঘাটতি এলাকা। প্রধান নদী ঝিনাই, বংশাই ও লৌহজং এবং তার শাখা নদী, খাল বিল ও নালা এবং উপজেলার মোট ২৬ টি বিল মূলত চাহিদার সিংহভাগ মাছ উৎপাদন করে থাকে। এবং ফুলকী ইউনিয়নে মোট ১৯৩টি বেসরকারী পুকুর রয়েছে। এখনও নদী এবং বিলে প্রাকৃতিক মাছ এবং পুকুরে চাষের মাছের প্রাধান্য রয়েছে। বাসাইলের নদী, বিল আর পুকুরে যে সমস্ত মাছ পাওয়া যায় তা নিম্নররূপঃ
ক) নদীঃ টেংরা, গুলসা, চেলা, বাতাসী, পুটি, বাইল্যা, বাইম, বোয়াল, আইর এবং দেশী চিংড়ি।
খ) বিলঃ টেংরা, গুলসা, পুটি, মলা, শিং, কই, মাগুর, টাকি, শইল, গজার, খলিসা, পলি বাইন,বোয়াল,কাতলা, রুই, মৃগেল, কালীবাউশ, চান্দা এবং নুন্দা প্রভৃতি।
গ) পুকুরঃ কাতলা, রুই, মৃগেল, কার্প, সরপুটি, পাংগাশ, নাইলটিকা, তেলাপিয়া প্রভৃতি।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস